জিনের প্রবহন

বিবর্তনবাদ

সূচনা

জিন ফ্লো বা জিন প্রবাহ বলতে বোঝায় কোনো পপুলেশনে জিনের নিয়মিত প্রবাহ বা এলিলের প্রবাহ। কোনো পপুলেশনে এক প্রজাতির জিনপুল অন্য প্রজাতিতে প্রবাহিত হওয়া কিংবা এক দলের জিনপুল ধীরে ধীরে অন্য দলে জিন প্রবাহিত হয়ে মিলে গিয়ে একক প্রজাতি হয়ে যাওয়া এগুলোকেই জিন ফ্লো বলা হয়। জনসংখ্যার মধ্যে জিনগত বৈচিত্র্য স্থানান্তরের জন্য জিন প্রবাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। কোনো পপুলেশনে জিনপ্রবাহের মাধ্যমে জিনগত বৈচিত্র্য তৈরি করে দুটো আলাদা প্রজাতি গড়ে উঠতে পারে আবার কোনো পপুলেশনে জিনপ্রবাহের মাধ্যমে আলাদা প্রজাতির ( জিনগতভাবে) সাথে জিনপ্রবাহ করে আদান প্রদানের মাধ্যমে একক প্রজাতিতে পরিণত হতে পারে।

থট এক্সপেরিমেন্ট

আমরা পুনরায় আমাদের থট এক্সপেরিমেন্ট এ ফিরে যাই। আজ আমরা ফিঞ্চ নিয়ে কাজ করব। মাঝারি সাইজের ফিঞ্চ ( Geospiza fortis) পাখির একটি পপুলেশন আছে। এই পপুলেশনের সব পাখি একে অন্যের মধ্যেই প্রজনন ঘটায় অর্থাৎ একই জিন আদান প্রদান করে। এক্ষেত্রে এরা একটি প্রজাতি হিসেবে স্বতন্ত্র এবং মৌলিকত্ব ধরে রেখেছে। যেহেতু তারা বাহিরের কোনো পাখির সাথে প্রজনন করছে না সেহেতু তারা একক প্রজাতি হিসেবে তাদের জিনপুল কে বিশুদ্ধ রাখছে।

ধরে নেই কোনো এক অজানা কারণে ওই ফিঞ্চ পাখিদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হলো। ফলে কি হলো সেই পপুলেশনের পাখিদের মধ্যে দুটো ভাগ হয়ে গেল। x এবং y. দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে ফিঞ্চ পাখির x অংশ y অংশ থেকে দূরবর্তী কোনো স্থানে মাইগ্রেট ( অভিবাসন) করলো। ফলে দুই প্রজন্ম পরে দেখা গেল x অংশ আর y অংশের সাথে প্রজনন করছে না। এবং y অংশ থেকে মাইগ্রেট করায় x অংশ এখন সম্পূর্ণ আলাদা। পরবর্তী প্রজন্ম থেকে x অংশ নিজেদের ভাগের পাখিদের সাথেই প্রজনন করা শুরু করলো। এতে কি হলো? তাদের মধ্যে আলাদা জিন প্রবহন শুরু হলো y অংশের পাখিদের তুলনায় ভিন্ন মিউটেশন হওয়া শুরু হলো। অপরদিকে y অংশের পাখিদের সাথেও অনুরুপ হতে লাগলো, দাড়াও নিজেদের অংশের পাখিদের সাথে প্রজনন শুরু করলো, তাদের মধ্যেও আলাদা মিউটেশন হতে শুরু করলো। বেশ কিছু প্রজন্ম পর দেখা যাবে একই পাখি আর তাদের নিজেদের মধ্যে প্রজনন করতে পারছে না। করলেও ফার্টাইল অফস্প্রিং ( প্রজননক্ষম সন্তান) জন্ম দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। অর্থাৎ তারা দুটো ভিন্ন প্রজাতিতে পরিণত হবে তাদের ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের কারণে। একই প্রজাতির মধ্যে জিনের আদান প্রদান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের মধ্যে জিন ভ্যারিয়েশন বাড়তে থাকলো।

দ্বিতীয় অংশ

এবার ধরে নেই, x অংশের ৯০% পাখি y অংশের ৯৫% পাখির সাথে প্রজননে অক্ষম এবং ফার্টাইল বাচ্চা প্রদানের ক্ষমতা হারিয়েছে। তবে x অংশের ১০% এবং y অংশের পাখিদের ৫% এখনো চাইলে নিজেদের মধ্যে প্রজনন করতে পারবে। কোনো কারণে x এবং y পাখিদের একাংশ পুনরা প্রজনন করা শুরু করলো। ফলে কি হবে তাদের মধ্যে ধীরে ধীরে আবার জিনের আদান প্রদান শুরু হবে, একই মিউটেশন একে অপরের মধ্যে পাস হতে থাকবে এবং ধীরে ধীরে এরা পুনরায় একক প্রজাতিতে পরিণত হবে। এভাবে জিন ফ্লো এর ফলে নতুন প্রজাতি গঠিত হলেও জেনেটিক ডাইভার্সিটি কমে যায়।

University of California

রেফারেন্সঃ

১. R, Briscoe DA, Ballou JD (2002-03-14). Introduction to Conservation Genetics. Cambridge University Press.

২.https://www.science.org/doi/10.1126/science.3576198

 

 

 

 

 

Asief Mehedi

Assalamualaikum to all.My name is Asief Mehedi . I am an informal philosophy student. Let's talk about comparative theology, we work to suppress atheism. Help us to suppress atheism and come forward to establish peace.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button