পপুলেশন বটলনেক
পপুলেশন বটলনেক বলতে এককথায় বোঝায় মহাবিপর্যয়। বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন ভূমিকম্প, ধ্বংসাত্মক ঝড় কিংবা ব্যাপক সহিংসতা ইত্যাদির ফলে কোনো পপুলেশনের জিনপুলের তারতম্য দেখা দিতে পারে এমনকি প্রায় সম্পূর্ণ পপুলেশন বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। পপুলেশন বটলনেক এর জন্য সৃষ্ট জেনেটিক ড্রিফট এলিল ফ্রিকোয়েন্সির ক্ষতিও করতে পারে।
যেমন ধরুন, কোনো পপুলেশনে মোট পাখি আছে ১০০ টা। এর মধ্যে ২৫ টা সাদা, ৩৫ টা ধূসর আর বাকি ৪০ টা হচ্ছে কালো রঙের। জিনোটাইপ ধরে নিলাম সাদা ( PP) ধূসর (Pp) কালো (pp)। একদিন কোনো এক বিপর্যয়ে ৩৫ টা ধূসর রঙের পাখি মারা গেল। এক্ষেত্রে কি হবে? Pp জেনোটাইপ টিকতে পারলো না সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে জন্মানো বংশধরদের মধ্যে কালো, সাদা রঙের পাখিই থাকবে। একেই পপুলেশন বটলনেক বলা হয়। কোনো এক বোতলে চার টি ভিন্ন রঙের ২০০ মার্বেল ঢুকিয়ে বোতলের মুখ খুলে ঝাকি দিলে চারটি রঙের মার্বেল মিশ্রিত হয়ে একসাথে নিচে পরার সম্ভাবনা খুবই কম বরং নির্দিষ্ট কোনো একটি রঙের মার্বেলের বাহিরে বের হওয়ার সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে বেশি।
© Researchgate
তবে এখানেই শেষ না। পরবর্তীতে একেবারেই যে আর ধূসর রঙের পাখি আসবে না এমন কোনো কথা নেই। ডমিনেন্ট এলিল এবং রিসেসিভ এলিল মিশ্রিত হয়ে যদি পরবর্তীতে আবার হেটেরোজাইগাস হিসেবে ধূসর রঙের জন্য প্রয়োজনীয় জিনোটাইপ তৈরি করতে পারে তাহলে পরবর্তীতে ওই সাদা, কালো রঙের পাখিদের থেকেই পুনরায় ধূসর রঙের পাখি আসতে পারে। ফিনোটাইপ তো আসলে তিনটা সাদা, কালো এবং ধূসর। অবশ্য পপুলেশন বটলনেক এর মাধ্যমে কোনো পপুলেশন একেবারে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া বা কোনো এক প্রকার জিনোটাইপ নির্মূল হয়ে যাওয়াটা একটু কঠিন। র্যান্ডমলি কোনো ট্রেইট তো আর একেবারে শেষ হবে না কমপক্ষে ৩-৪ টা হলেও থেকে যাবে। পরবর্তীতে ওই ৩-৪ টা থেকে পুনরায় কোনো পপুলেশন আসতে পারে অথবা কিছু প্রজন্ম পর ওই ৩-৪ টা একেবারে শেষ হয়ে যেতে পারে এবং বাকি থাকা পপুলেশন আলাদা প্রজাতি হিসেবে রিপ্রেজেন্ট হতে পারে।
রেফারেন্সঃ
1.William R. Catton, Jr. “Bottleneck: Humanity’s Impending Impasse” Xlibris Corporation, 2009. p.290