রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুতে সরব বিশ্ব, ফিলিস্তিন, ইয়েমেনের বেলায় কেন নিরব ?
রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুতে / রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো যতটা সরব ঠিক বিপরীত চিত্র বিশ্বের অন্যান্য সংঘাত কবলিত দেশগুলোর ক্ষেত্রে। রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যতটা কঠোর ঠিক ততোটাই নিরব ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন কিংবা ইয়েমেনে সৌদি হামলার বিরুদ্ধে। বিশ্ব গণমাধ্যম এমনকি ফুটবল বিশ্বও যেন একচোখা। কিন্তু কেন এই দ্বিমুখী নীতি?
রুশ অগ্রাসনের বিপক্ষে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ দেশসমূহ, জনপ্রিয় তারকা, ক্রীড়াবিদ সকলেই নিজ নিজ জায়গা হতে নিন্দা জানিয়েছে। রাশিয়েকে দেওয়া হচ্ছে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু ফিলিস্তিনি ইসরাইলের কর্তৃত্ব ফলানো, বর্বরোচিত আক্রমণ ও নৃশংসতার শিকার ফিলিস্তিনিদের জন্য পশ্চিমাদের মানবতা ঘুমিয়ে থাকে কেন?
ইউক্রেনে হামলার পর রাশিয়ার বিপক্ষে পশ্চিমারা ইতিমধ্যে রাশিয়ার সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা শুরু করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন,কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের আকাশ পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রাশিয়ার জন্য! ডলারের বিপরীতে রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের দাম ৩০ শতাংশ কমে গেছে ও দেশটির পুঁজিবাজার ৪০ শতাংশ লোকসান করেছে বলেও উল্লেখ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। প্রযুক্তি জায়ান্ট ‘অ্যাপল’ রাশিয়ায় তাদের সকল ধরনের পণ্য বিক্রি বন্ধ ঘোষণা করেছে।
অথচ মুসলিম বিশ্বের বর্বরোচিত আক্রমণ চালিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায় ইসরায়েল। শুধু তাই নয় ফিলিস্তিনকে সমর্থন করাটা ইউরোপে অপরাধের চোখে দেখা হয়।( রেফারেন্সঃ ) এটাই পশ্চিমাদের সিলেক্টিভ মানবতা।
এইতো মাত্র কয়মাস আগেই নিরিস্ত্র ফিলিস্তিনিদের উপর রক্ত বন্য বয়িয়ে দিয়েছিল ইসরায়েল! শুধু হত্যা নয় মুসলিম দেশগুলোতে ইহুদি খ্রিষ্টানদের অত্যাচারে দুর্বিষহ জীবন-যাপন করতে হয় মুসলিমদের। কত শত-কোটি মুসলিমের রক্ত নিয়ে হলি খেলেছে এই পশ্চিমারা তার কোনো ইয়াত্তা নেই! যেহেতু মুসলিমের রক্ত মূল্যহীন তাই এটা নিয়ে কোন কথা হয় না, নিন্দা জানানো হয়ানা, বিবৃতি হয়না! কিন্তু আজ রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুতে সবার বিবেকে নাড়া দিচ্ছে। মানবতা হাইবারনেশন থেকে জেগে উঠেছে। সিলেক্টিভ নৈতিকতা মাথা চাড়া দিচ্ছে! ইসরায়েল–ফিলিস্তিন ইস্যুতে ঘুমিয়ে থাকে মানবতা।
স্বাধীনতাকামী ফিলিস্তিনিদের যে গণমাধ্যম জঙ্গি বলে প্রচার করে,তারাই প্রেট্রোল বোমা বানানো ইউক্রেনের বেসামরিকদের দেখাচ্ছে লড়াকু সৈনিক হিসেবে।
রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়াকে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করেছে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা! দেশটিতে কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে না। আর নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলতে হলে নিজেদের পতাকা ও জাতীয় সংগীত ছাড়া ফুটবল ইউনিয়ন অব রাশিয়া নামে খেলতে হবে তাদের। ফিফার সাথে সংগতি জানিয়েছে উয়েফা। কিন্তু ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে কেন নিরব ছিলো ফিফা এবং উয়েফা ? মাত্র কয়মাস আগেই যখন ইসরায়েল সন্ত্রাসীরা ফিলিস্তিনি মজলুম জনতার উপর একের পর এক হামলা করেছিলো তখনও ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছিল! কিন্তু রাজনৈতিক দোহায় দিয়ে তাতে কর্ণপাত করেনি ফিফা কিংবা উয়েফা কেউই! শুধু কি তাই! পরমাণু অস্ত্র রাখার দোহায় দিয়ে ইরাক এবং টুইন টাওয়ারে হামলার অভিযোগে আফগানিস্থানকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করা আমেরিকার বিরুদ্ধেও উঠেছিল নিষিদ্ধের দাবি! কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেনি ফিফা কিংবা উয়েফার মতো বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গন মোড়লরা!
ইউক্রেন সংকট নিয়ে জাতিসংঘের ‘বিরল’ বৈঠক
জাতিসংঘে সর্বশেষ জরুরি বৈঠক বসেছিল ১৯৮২ সালে। ৪০ বছর পর রাশিয়া-ইউক্রেণ ইস্যুতে আবারো এমন এমন আয়োজন করল জাতিসংঘ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা হবে কয়েকশত। কিন্তু পুরো পৃথিবীতে লক্ষ-কোটি মুসলিম হত্যার পরেও জরুরি বৈঠকের প্রয়োজন হয়নি! এরাই আবার আমাদের শান্তির কবিতা শুনায়! আমরাও তা গিলে গিলে খাই!
পশ্চিমা বিশ্বের এহেন দ্বিমুখী নীতি নিয়ে যমুনা টিভির প্রতিবেদন।
পশ্চিমা বিশ্বের এহেন দ্বিমুখী নীতি নিয়ে টি-স্পোর্টসের প্রতিবেদন।
ফিলিস্তিনি ইসরায়লের সন্ত্রাসীদের হামলার একটি অংশ।
শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে খৃস্টধর্মের সন্ত্রাসবাদ – Faith and Theology (faith-and-theology.com)