বড়দিন কি আসলেই যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন ?

বড়দিন কি আসলেই যিশুর জন্মদিন ?

বড়দিন কি আসলেই যিশুর জন্মদিন

বড়দিন বা ক্রিসমাস

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে বড়দিন বা ক্রিসমাস। ২৫ ডিসেম্বর তারিখে যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন উপলক্ষে খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারীরা এই দিনটিকে উদযাপন করে। তবে ২৫ ডিসেম্বর যে যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। 

হযরত ঈসা (আঃ) বা যিশু খ্রিস্টের জন্ম কি ২৫ ডিসেম্বর ? 

যিশুর জন্ম আসলে কত তারিখে বা কত সালে হয়েছে তা নিয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যায়না। তবে যিশুর জন্মের সাল ও তারিখ নিয়ে অনেকগুলো মত রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি ২৫ ডিসেম্বর। এই দিনটিকে খ্রিস্টান সম্প্রাদয়ের লোকেরা যিশুখ্রিস্টের জন্ম দিন হিসেবে পালন করে। তবে এই দিনটিকেও নিশ্চিতভাবে যিশুর জন্মদিন বলা যায়না। কারণ বাইবেলের কোথাও যিশুর জন্মদিন সম্পর্কে বলা নেই। স্বয়ং ক্যাথলিক পোপ এই কথা স্বীকার করেছেন।[1] Pope Benedict Disputes Jesus’ Date of Birth | TIME.com  

যিশুর জন্ম নিয়ে বাইবেলে উল্লেখ আছে, 

সেখানে গ্রামের বাইরে মেষপালকেরা রাতে মাঠে তাদের মেষপাল পাহারা দিচ্ছিল৷

এমন সময় প্রভুর এক স্বর্গদূত তাদের সামনে উপস্থিত হলে প্রভুর মহিমা চারদিকে উজ্জ্বল হয়ে দেখা দিল৷ এই দেখে মেষপালকরা খুব ভয় পেয়ে গেল৷

সেই স্বর্গদূত তাদের বললেন, ‘ভয় নেই, দেখ আমি তোমাদের কাছে এক আনন্দের সংবাদ নিয়ে এসেছি৷ এই সংবাদ সকলের জন্য মহা আনন্দের হবে৷

কারণ রাজা দাযূদের নগরে আজ তোমাদের জন্য একজন ত্রাণকর্তার জন্ম হয়েছে৷ তিনি খ্রীষ্ট প্রভু৷

আর তোমাদের জন্য এই চিহ্ন রইল, তোমরা দেখবে একটি শিশুকে কাপড়ে জড়িয়ে একটা জাবনা খাবার পাত্রে শুইয়ে রাখা হয়েছে৷’ [2]বাইবেলঃ লুক; অর্ধ্যায়; ২ আয়াত ৮-১২

এই বর্ণণা অনুযায়ী যিশুর জন্মের রাতে রাখলরা মেষ চড়াচ্ছিলো। এবং সেটা যদি ২৫ ডিসেম্বর হয় তাহলে সেই সময়টা শীতের সময়। শীতের সময় রাতের বেলায় রাখালরা মেষ চড়ানোর কোন যৌক্তিকতা নেই। তাই অনেক খ্রিস্টান স্কলারগণ এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়, সেপ্টেম্বর বা মার্চের শেষের সময়কে যিশুর জন্মের সময় হিসেবে অনুমান করেছেন। 

ক্যাথলিক পোপ তার বইতে উল্লেখ করেন, বাইবেলের গসপেল অফ ম্যাথিউ মতে, যিশু খ্রিস্টের জন্ম হয় হেরোদ দ্যা গ্রেটের শাসনামলে। কিন্তু হেরোদ দ্যা গ্রেট মারা যায় খ্রিস্টপূর্ব ৪ সালে। খ্রিস্টপূর্ব বলতে বুঝানো হয় যিশুখ্রিস্টের আগের সময়কাল। এবং খ্রিস্টাব্দ বলতে বুঝানো হয় যিশুখ্রিস্টের জন্মের পরের সময়কাল। কিন্তু এখানে একটা সমস্যা রয়েছে তা হলো, যিশু খ্রিস্ট ০০ সালে জন্মগ্রহণ করেননি। কারণ, হেরোদ দ্যা গ্রেট মারা যায় খ্রিস্টপূর্ব ৪ সালে অর্থাৎ যিশুর জন্মের ৪ বছর আগে আবার গসপেল অফ ম্যাথিউ মতে যিশুর জন্ম হয় হেরোদ দ্যা গ্রেটের শাসনামলে। সুতরাং যিশুর জন্ম খিস্টপূর্ব ৪ সালের পরে হতে পারেনা, ৪ সালের আগেই হয়েছে এবং যিশুর জন্ম ০০ সালে হয়নি।  

খ্রিস্টান পোপরা বিভিন্ন উপায়ে যিশুখ্রিস্টের জন্মের সময়কাল বের করার চেষ্টা করে। যেমন, গসফেল অফ লুক ও গসফেল অফ ম্যাথিউ এর বর্ণণা এবং বেথেলহেমের নক্ষত্র দিয়ে। যিশু খ্রিস্টের জন্ম নিয়ে খ্রিস্টান পোপদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য মত হচ্ছে , যিশু ৪-৬খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেছে। তার মধ্যে ৪ খ্রিস্টাব্দ সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত। সুতরাং যিশুর জন্ম থেকেই সাল গণণা শুরু হতো তাহলে বর্তমানে ২০২৩ সাল না হয়ে ২০২৭ সাল হওয়ার কথা ছিলো। 

খিস্টান ধর্ম সম্পর্কে অন্যান্য লেখাঃ খ্রিষ্টান ধর্ম – Faith and Theology (faith-and-theology.com)

Sazzatul Mowla Shanto

As-salamu alaykum. I'm Sazzatul mowla Shanto. Try to learn and write about theology and philosophy.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button