স্রষ্টা কি নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করেছে ? 

স্রষ্টা কি নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করেছে ?

স্রষ্টা বা যে কোনো কিছু কি নিজেকে নিজে সৃষ্টি করতে পারবে? যেমন, আমি কি নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করতে করতে পারবো? একটা আপেল কি নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করতে পারেব? ইউনিভার্স কি নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করতে পারবে?

সৃষ্টি বলতে বুঝানো হয় কোনো কিছু অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে আসা। অর্থাৎ যার অস্তিত্ব পূর্বে ছিলোনা পরবর্তীতে অস্তিত্বে এসেছে। তার মানে এখান থেকে বুঝতে পারছি যে, কোনো কিছু সৃষ্টি হতে হলে সৃষ্টির পূর্বে তাকে অনস্তিত্বে থাকতে হবে।
এখন কোনো বস্তু বা সত্তা যদি নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করে তাহলে সে অস্তিত্বে এসেছে অনস্তিত্ব থেকে। অস্তিত্বশীল হওয়ার পূর্বে সে ছিলো অস্তিত্বহীণ। আবার, Principle of sufficient reason (PSR) অনুযায়ী সব কিছুর অবশ্যই কারণ থাকবে। তাহলে কোনো বস্তু বা সত্তার অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে আসার জন্যও কারণ থাকা লাগবে।
এখন কোনো বস্তু বা সত্তা যদি নিজেই নিজের অস্তিত্বের কারণ হয়, তাহলে অস্তিত্বশীল হওয়ার জন্য অস্তিত্বে আসার পূর্বে অস্তিত্বের কারণ হিসেবে তাকে অস্তিত্বশীল হতে হচ্ছে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে কোনো কিছু যদি নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করে তাহলে একই সময় তাকে অস্তিত্বে থাকা লাগবে আবার অনস্তিত্বে থাকা লাগবে। যা লজিক্যালি ইম্পসিবল।

উদাহারণ স্বরূপ, ‘ক’ নামক ব্যক্তি জন্ম নেওয়ার আগেই কি ‘ক’ নিজেকে সৃষ্টি করতে পারবে? বিষয়টা আরো একটু সহজভাবে ব্যাখ্যা করি। ধরুন, ‘ক’ নামক ব্যক্তি নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করেছে। এখন সৃষ্টি মানে যেহেতু অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে আসা তার মানে ‘ক’ নামক ব্যক্তিও অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে এসেছে। অর্থাৎ, অস্তিত্বে আসার পূর্বে ‘ক’ ছিলো অস্তিত্বহীন।
Principle of sufficient reason (PSR) নিয়ম অনুযায়ী ‘ক’ অস্তিত্বে আসতে হবে অবশ্যই একটা কারণ লাগবে। যেহেতু ‘ক’ নামক ব্যক্তি নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করেছে সেহেতু ‘ক’ নামক ব্যক্তির কারণ সে নিজেই। সুতরাং ‘ক’ নামক ব্যক্তি অস্তিত্বে আসার আগেই নিজের অস্তিত্বের কারণ হিসেবে অস্তিত্বে থাকতে হচ্ছে।

সুতরাং, ‘ক’ নামক ব্যক্তি যদি নিজেই নিজেকে ক্রিয়েট করে তাহলে একই সময় তাকে অস্তিত্বে থাকা লাগবে আবার অনস্তিত্বে থাকা লাগবে। যা লজিক্যালি Low of Logic এর প্রথম সূত্র Low of Non-contradiction কে ভায়োলেট করে। Principle of noncontradiction (PNC) নামেও পরিচিত। Low of Non-contradiction বলতে বুঝানো হয় সাঙ্গর্ষিক কোনো কিছুই থাকতে পারেনা। যেমন, N= True, N= False.
এখানে N একই সাথে সত্য আবার মিথ্যা। কোনো জিনিস একই সময় পারস্পরিক দ্বন্দ্বমূলক অবস্থায় থাকা পসিবল না। তাই স্রষ্টা নিজেকে নিজে সৃষ্টি করেনি। তিনি ইটারনাল। তার সৃষ্টি হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।

Principle of noncontradiction কে অস্বীকার করা অসম্ভব। কারণ এটা স্বতসিদ্ধ সত্য। একটা দৃশ্যপট কল্পনা করুন, মুনিম নামের এক লোক বললো যে সে Principle of noncontradiction কে বিশ্বাস করেনা। যেহেতু সে Principle of noncontradiction বিশ্বাস করেনা সেহেতু তার মতে কোনো জিনিস একই সাথে সত্য আবার মিথ্যা হতে পারে। অর্থাৎ, তার বিশ্বাস করা আর বিশ্বাস না করা দুটো একই সময়ে একই। সুতরাং, মুনিম যখনই বলেছে সে, Principle of noncontradiction বিশ্বাস করেনা ঠিক তখনই তার মতে সে Principle of noncontradiction বিশ্বাস করে। অর্থাৎ, Principle of noncontradiction ব্যাতিত আপনি কোনো কিছুই চিন্তা করতে পারবেননা।

Sazzatul Mowla Shanto

As-salamu alaykum. I'm Sazzatul mowla Shanto. Try to learn and write about theology and philosophy.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button