হাদিসে কি নারীর বীর্য সম্পর্কে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে?

বিজ্ঞান

হাদিসে কি নারীর বীর্য সম্পর্কে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে?

আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছায় আজ একটি হাদিস নিয়ে আলোচনা করব এবং পর্যালোচনা করে দেখব, উক্ত হাদিসটি নারী পুরুষের বীর্য সম্পর্কে কোনো ভুল তথ্য দেয় কিনা কিংবা রিপ্রোডাকশন সম্পর্কে উক্ত হাদিসের অভিমত কি এবং তা কতটুকু গ্রহণযোগ্য।

হাদিস

আব্বাস ইবনুল ওয়ালীদ (রহঃ) ….. আনাস ইবনু মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। উম্মু সুলায়ম (রাযিঃ) বলেন, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সে মহিলা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন যে ঘুমে পুরুষ যা দেখে তাই দেখতে পায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, মেয়েলোক যখন তেমনই দেখবে তখন সে গোসল করবে। উম্মু সালামাহ (রাযিঃ) বলেন, এ কথায় আমি লজ্জাবোধ করলাম। তিনি বললেন, এ রকমও কি হয়? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, হ্যাঁ, তা না হলে ছেলে মেয়ে তার সদৃশ কেমন করে হয়? পুরুষের বীর্য গাঢ়, সাদা আর মহিলাদের বীর্য পাতলা, হলুদ। দুয়ের মধ্যে থেকে যার বীর্য ওপরে উঠে যায় অথবা আগে চলে যায় (সন্তান) তারই সদৃশ হয়। [1]Sahih Muslim 311

ব্যাখ্যা

এখানে উম্মু সুলায়ম (রাযিঃ) মহানবী (ﷺ) কে নারীর স্বপ্নদোষ নিয়ে জিজ্ঞেস করলেন। মহানবী (ﷺ) বললেন, যদি মেয়েলোক এটি দেখে তবে সে গোসল করে নেবে। এখানে মূলত ভ্যাজাইনাল ফ্লুইড কে বোঝানো হয়েছে। এটি হলো বক্তব্যের একটি অংশ।

আবার, উম্মু সুলায়ম (রাযিঃ) যখন বললেন, “এ রকম ও কি হয়”? তখন রাসুল (ﷺ) বললেন, হ্যাঁ, তা না হলে ছেলে মেয়ে তার সদৃশ কেমন করে হয়? এর দ্বারা বোঝানো হয়েছে যদি মেয়েদের এমন না হয় বা তাঁদের এমন কিছু না থাকে তবে ছেলে মেয়েরা তার সদৃশ কিভাবে পায়? পরবর্তী অংশে মহানবী (ﷺ) বলেন, পুরুষের বীর্য গাঢ় এবং ঘন এবং মেয়েদের বীর্য হলুদ এবং পাতলা। সঙ্গত কারণেই বোঝা যায় স্বপ্নদোষে নির্গত কোনো কিছুর বৈশিষ্ট্য শেষোক্ত অংশে উল্লেখ করা হয়নি বরং ছেলে এবং মেয়ের ডিম্বাণু এবং শুক্রাণুর বৈশিষ্ট্য কে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

সমস্যার শুরু:

উম্মু সুলায়ম (রাযিঃ) এর প্রশ্নের উত্তরে মহানবী (ﷺ) উত্তর দেয়ার পর তিনি বললেন হ্যাঁ, তা না হলে ছেলেমেয়ে তার সদৃশ কেমন করে হয়? এটাকে অনেকে এভাবে ইন্টারপ্রেট করে যে স্বপ্নদোষে নির্গত হওয়া কোনো কিছুকে পিতামাতার সাথে সন্তানের সিমিলারিটির কারণ হিসেবে ধরা হয়েছে। আবার শেষ অংশে রাসুল (ﷺ) বলেন, পুরুষের বীর্য গাঢ় এবং ঘন এবং মেয়েদের বীর্য হলুদ এবং পাতলা। এখানে বীর্য এর আরবি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে مَاءُ যার ইংরেজি অনুবাদ করা হয়েছে discharge. এ থেকে অধিকাংশ সংশয়বাদী ধরে নেয়, প্রথম অংশের স্বপ্নদোষের নির্গত কোনো কিছুকেই হলুদ এবং পাতলা হিসেবে বলা হয়েছে। যার ফলে তারা কিছু প্রশ্ন উত্থাপিত করে যেমন-

১. যদি নারীর ওয়েট ড্রিমের নির্গত কোনো কিছুকে পাতলা এবং হলুদ বলা হয় তবে তা squirting fluid কে নির্দেশ করে যা অনেকাংশে আসে নারীর মুত্রথলী থেকে নির্গত হয়।

২. squirting fluid এ ওভাম থাকেনা সুতরাং এটি ডিম্বাণু হতে পারে না।

৩. স্বপ্নদোষে বীর্যপাত, ও নারীদের বীর্য হলুদ ও পাতলা বলা হয়েছে হাদিসে। এবং বলা হয়েছে এই squirting fluid এর ডমিনেন্ট এর ফলে কোনো এক জনের সাদৃশ্য সন্তানের প্রতি তীব্র হয় যা সত্য নয়।

সমস্যার সমস্যা:

যখন প্রথমবার উম্মে সুলায়ম (রাযিঃ) প্রশ্ন করেন যে ঘুমে পুরুষ যা দেখে মেয়েরাও যদি তা দেখতে পায়, সেক্ষেত্রে মহানবী (ﷺ) বললেন, ‘যদি মেয়েলোক তেমনই দেখে তবে সে গোসল করবে’ অতঃপর উম্মে সুলায়ম লজ্জিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন ‘ এমন ও কি হয়?’ এর মানে আসলে কি দাঁড়ায়? উম্মে সুলায়ম এর প্রথমবারের প্রশ্ন থেকে এটি পরিষ্কার মেয়েদের স্বপ্নদোষ সম্পর্কে সে জানতো এবং জানতো বলেই কি করণীয় তা নিয়ে মহানবী (ﷺ)প্রশ্ন করেছিলেন। পরবর্তীতে গোসল করার নির্দেশ দিলে উম্মে সুলায়ম লজ্জিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন ” এমন ও কি হয়” এর মানে হলো এটা কি সম্ভব যে মেয়ের স্বপ্নদোষ ছেলেদের মতোই হয়? তখন রাসুল (ﷺ) বললেন, হ্যাঁ, তা নাহলে ছেলে মেয়ে তার সদৃশ কেমন করে হয়? অর্থাৎ ছেলের যা আছে মেয়ের ও তেমন কিছু থাকার ফলেই সন্তান পিতামাতার বৈশিষ্ট্য লাভ করে। এক্ষেত্রে ‘স্বপ্নদোষ’ কমন হওয়াটা উল্লেখ্য নয় কেননা উম্মে সুলায়ম এই প্রশ্ন করেনি যে মেয়েরও স্বপ্নদোষ হয় কিনা বরং প্রশ্নটা ছিলো মেয়েদের স্বপ্নদোষ কি ছেলেদের মতোই? এর দ্বারা উপলব্ধি হতে পারে ছেলের যা আছে (বীর্য) এবং মেয়ের যা আছে ( বীর্য/ ডিম্বাণু) যা ব্রড সেন্সে ক্রোমোজম বহন করে এবং ছেলে মেয়ে উভয়ের মধ্যেই তা বিদ্যমান। এছাড়াও যদি ধরেও নেই বলা হয়েছে যে স্বপ্নদোষ একই বুঝিয়ে বলা হয়েছে যে ‘ তা না হলে সন্তানেরা তার( পিতামাতার) সদৃশ কিভাবে হয়? এতেও স্বপ্নদোষেই নির্গত কোন কিছুকে পিতামাতার সাথে সন্তানের বৈশিষ্ট্য সাদৃশ্য হওয়ার কারণ হিসেবে বোঝায় না। বরং স্বপ্নদোষের উৎপত্তিস্থল কে পিতামাতার সাথে সন্তানের বৈশিষ্ট্য সাদৃশ্য হওয়ার কারণ হিসেবেও উল্লেখ করা হতে পারে। দুরকম এপ্রোচ হতেই পারে তবে এর দ্বারা স্বপ্নদোষে নির্গত কোনো কিছুই একমাত্র কারণ তা প্রমাণিত হয়না। বরং মেয়ে এবং ছেলের একইরকম স্বপ্নদোষ হয় এ কথায় আবার বলা হয়েছে ছেলের মধ্যে যা আছে মেয়ের মধ্যেও তাই আছে যার ফলে সন্তান পিতামাতার বৈশিষ্ট্য লাভ করে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে স্বপ্নদোষে যে কেবল স্পার্ম ই বের হয় এমনটা মোটেও নয়। বরং নানা ধরনের স্বপ্নদোষ হতে পারে। এমনকি দুর্ভাগ্যবশত, মহিলাদের যৌন স্বাস্থ্যের উপর গবেষণার অভাবের কারণে, মহিলাদের বীর্যপাত আসলে কী এবং এটি কী দিয়ে তৈরি তা নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে। [2]https://www.healthline.com/health/womens-health/vaginal-wetness#2.-Is-it-water-down-there?-Urine?-Lubrication?

দ্বিতীয়ত হাদিসে উল্লেখিত প্রথমবারের প্রশ্ন এবং দ্বিতীয়বারের প্রশ্ন আলাদা প্রশ্ন সেটা একটু আগে আমরা দেখেছি। প্রশ্ন আলাদা হওয়াতেই উত্তর ভিন্ন এবং মহানবী (ﷺ) এর দ্বিতীয় উত্তরটি কিছুটা কনফিউজিং মনে হয় যদিওবা এখানে কোনো কনফিউশান নেই। এমন ও কি হয়? ‘ হ্যাঁ, তা না হলে ছেলে মেয়ে তার (পিতামাতার) সদৃশ কেমন করে পায়? অর্থাৎ যদি একইরকম না হয় তবে ছেলে মেয়ে পিতামাতার বৈশিষ্ট্য কিভাবে লাভ করে? এখানে নারী পুরুষের কিছু ‘ বৈশিষ্ট্য’ একই রকম যার ফলে তাদের স্বপ্নদোষও একই রকম এবং এর ফলে সন্তানেরা পিতামাতার বৈশিষ্ট্য পেয়ে থাকে। এখানে স্বপ্নদোষ মুখ্য নয় বরং নারী পুরুষের কিছু সিমিলারিটি লক্ষ্যণীয়, যেমন অন্য একটি হাদিসে মহানবী (ﷺ) বলেন, নারীরা তো পুরুষদেরই অংশ। [3]Sunan At Tirmidhi 113

বীর্য সংক্রান্ত কথোপকথন

এতোক্ষণ উম্মে সুলায়ম (রাযি) এর দুটো প্রশ্ন এবং রাসুল (ﷺ) এর দুটো উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এরপর রাসুল (ﷺ) বললেন, “পুরুষের বীর্য গাঢ়, সাদা আর মহিলাদের বীর্য পাতলা, হলুদ।” স্পষ্টতই এই সংযুক্ত অংশের সাথে পূর্বের দুটো প্রশ্নের কোনো মিল নেই বা সংযোগ নেই। বরং এটি মুহাম্মদ (ﷺ) এর যুক্ত করা একটি কথা যেখানে তিনি বীর্যের প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা করলেন। হাদিসে বীর্যের জন্য ব্যবহৃত শব্দটি হলো ‘مَاءُ‘ যার শাব্দিক অর্থ হলো ‘তরল’ বা ‘পানি জাতীয় কিছু ‘ তবে এরাবিক ডিকশনারীতে মানুষের সাথে এই ‘مَاءُ‘ শব্দকে অনুবাদ করা হয়েছে বীর্যের সাথে। [4]https://www.arabdict.com/en/english-arabic/%D9%85%D8%A7%D8%A1+%D8%A7%D9%84%D8%B1%D8%AC%D9%84 বিস্তারিত অর্থে এটি হচ্ছে তরল পদার্থ সেভাবে অনুবাদ করলে দাঁড়ায় মানুষের তরল পদার্থ। সহিহ মুসলিমের ৩১১ নাম্বার হাদিসে র ইংরেজি অনুবাদে مَاءُ কে অনুবাদ করা হয়েছে ‘discharge‘ বা স্রাব হিসেবে। তবে সেভাবেই অনুবাদ করা হোক না কেন এই مَاءُ দ্বারা কখনোই নির্গত স্রাব বোঝায় না এমনকি বোঝানো সম্ভব ও না কারণ ‘নির্গত স্রাব ‘ এটি মূলত Verb ক্রিয়াবাচক শব্দ তবে ‘مَاءُ ‘/ তরল পদার্থ / বীর্য এটি Noun বা নামবাচক শব্দ। যার ফলে এই ‘مَاءُ‘ শব্দের আক্ষরিক অনুবাদ হবে ‘তরল পদার্থ’ বা ‘বীর্য’ এখন প্রশ্ন উঠতে পারে আমি কি অনুবাদকের তুলনায় বেশি জানি? মোটেও না তবে এখানে এই অনুবাদ সঙ্গত কারণেই কিছুটা বিভ্রান্তিমূলক। ‘Discharge’ শব্দটাও এখানে Noun হিসেবেই ব্যবহার করা হয়েছে কারণ পুরুষের ক্ষেত্রে বীর্য বলতে স্রাব কে বোঝানোটা সাধারণ বিষয় এবং এটিকেই সর্বসাধারণভাবে ব্যবহার করা হয়েছে তার মানে এইনা যে মেয়েদের Discharge বা স্রাব কেও ডিম্বাণু হিসেবে ধরে নেয়া হয়েছে। বেশ কিছু হাদিস পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাবো مَاءُ কে আসলে কিভাবে অনুবাদ করা হয়েছে।  এমনকি খোদ সহিহ মুসলিম হাদিসেও مَاءُ এর অনুবাদ water করা হয়েছে। Discharge নয়!

হাদিস:১ أَخْبَرَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ أَنْبَأَنَا عَبْدَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ مَاءُ الرَّجُلِ غَلِيظٌ أَبْيَضُ وَمَاءُ الْمَرْأَةِ رَقِيقٌ أَصْفَرُ فَأَيُّهُمَا سَبَقَ كَانَ الشَّبَهُ ‏”

The Messenger of Allah (ﷺ) said: ‘The man’s water is thick and white, and the woman’s water is thin and yellow. Whichever of them comes first, the child will resemble (that parent).'” [5]Sunan an-Nasa’i 200 https://sunnah.com/nasai:200

 

হাদিস:২ وَزَادَ مُسْلِمٌ بِرِوَايَةِ أُمِّ سُلَيْمٍ: «أَنَّ مَاءَ الرَّجُلِ غَلِيظٌ أَبْيَضُ وَمَاءَ الْمَرْأَةِ رَقِيقٌ أَصْفَرُ فَم أَيِّهِمَا عَلَا أَوْ سَبَقَ يَكُونُ مِنْهُ الشَّبَهُ»

The man’s liquid is coarse and white, the woman’s fine and yellow, so the resemblance comes from the one which prevails or comes first.” [6]Mishkat al-Masabih 433, 434 https://sunnah.com/mishkat:433

এসকল ক্ষেত্রে مَاءُ কে অনুবাদ করা হয়েছে বীর্য হিসেবে এবং এই مَاءُ পুরুষের ক্ষেত্রে বীর্য এবং নারীর ক্ষেত্রে ডিম্বাণুকেই নির্দেশ করে। মূলত আরবি শব্দের মাল্টি লেয়ার এপ্রোচ থাকে কিছু এপ্রোচ কন্টেক্সট ভিত্তিক হয় ব্যাকরণ অনুযায়ী। যেমন-

 

وَعَنِ ابنِ مَسعُودٍ رضي الله عنه عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «لاَ يَدْخُلُ الجَنَّةَ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِنْ كِبْرٍ

ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’যার অন্তরে অণু পরিমাণও অহংকার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। [7]Riyad as-Salihin 1575 https://sunnah.com/riyadussalihin:1575

এখানে ذَرَّةٍ (dharra) কে অনুবাদ করা হয় small, smallest part ইত্যাদি হিসেবে এবং এটি Noun. [8]https://www.almaany.com/en/dict/ar-en/%D8%B0%D8%B1%D8%A9/ হাদিসটিতে অনুবাদ করা হয়েছে অণু পরিমাণ হিসেবে। অর্থাৎ কারো অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার থাকলেও সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এখন যদি কারো অন্তরে এক কোয়ার্ক পরিমাণ অহংকার থাকে তবে কি সে জান্নাতে প্রবেশ করবে? না মোটেও না, আবার ধরুন, যদি আমরা পদার্থের ক্ষুদ্রতম অংশ স্ট্রিং পেয়ে যাই তাহলে হাদিসটি অনুযায়ী কেউ অনুর থেকে কম পরিমাণ অহংকার করলে কি জান্নাতে যাবে? না বরং তখনকার কনটেক্সট অনুযায়ী অনুবাদ হবে। কারণ আপনি Atom বলুন আর String বলুন দুটোই অতিক্ষুদ্র, আর ذَرَّةٍ শব্দের আক্ষরিক অনুবাদই হলো অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্রতর। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে কুরআন এবং হাদিসের একেক শব্দের মাল্টি লেয়ার এপ্রোচ সর্বদাই ছিলো, আছে এবং থাকবে।

এখান থেকে বোঝা যাচ্ছে প্রশ্নোক্ত হাদিসে উল্লেখিত দুটো প্রশ্নের দুটো উত্তর তৃতীয় অংশ থেকে আলাদা। এবং প্রথম প্রশ্নের উত্তর এ স্রেফ স্বপ্নদোষ হলে গোসল করে নেয়ার কথা বলা হয়েছে, স্বপ্নদোষ এ কি বের হয়, কি রঙের বের হয় তা বলা হয়নি, এমনকি মেয়েদের স্বপ্নদোষে আসলে ঠিক কি নির্গত হয় সেটা আসলেই ইজাকুলেশন নাকি squirting fluid এ নিয়ে এখনো বিস্তর বিতর্ক চলমান। [9]Pastor Z. (2013). Female ejaculation orgasm vs. coital incontinence: a systematic review. The journal of sexual medicine, 10(7), 1682–1691. https://doi.org/10.1111/jsm.12166মেয়েদের স্বপ্নদোষে করণীয় কি সেটা প্রথম প্রশ্নের উত্তরেই সমাপ্ত হয়েছে। পরবর্তীতে নারী এবং পুরুষের বীর্য বা শুক্রাণু এবং ডিম্বাণুর প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ছেলের مَاءُ বা শুক্রাণু হচ্ছে সাদা এবং ঘন অন্যদিকে মেয়েদের ডিম্বাণু হচ্ছে হলুদ এবং সুক্ষ্ম। সুক্ষ্ম বলার কারণ হলো ‘রাক্বীক’ শব্দের অর্থ সুক্ষ্ম, পাতলা ইত্যাদি। নারীর ডিম্বাণু সত্যিকার অর্থেই হলুদ এবং সুক্ষ্ম!

সূত্র: new scientist [10]https://www.newscientist.com/article/mg19826604-200-human-egg-makes-accidental-debut-on-camera/

হাদিসের শেষের অংশ ‘ দুয়ের মধ্যে থেকে যার বীর্য ওপরে উঠে যায় অথবা আগে চলে যায় (সন্তান) তারই সদৃশ হয়।” অর্থাৎ দুজনের শুক্রাণু বা ডিম্বাণুর যে জিন (gene) যার উপর ডমিনেন্ট হয় সন্তানের মধ্যে তার বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায়। এলিল ফ্রিকোয়েন্সী নিয়ে ধারণা থাকলে বিষয়টি জানার কথা, এছাড়াও সেক্স এবং জেনেটিক শাফলিং নিয়ে জানলে এটাও জানা থাকবে যে শুক্রাণু এবং ডিম্বাণু (ক্রোমোজম) জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল বহন করে। [11]https://evolution.berkeley.edu/sex-and-genetic-shuffling-the-details/

উপসংহার:

সহিহ মুসলিমের ৩১১ নং হাদিসে উম্মে সুলায়ম (রাযি) এর স্বপ্নদোষ নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়েছে। প্রথম উত্তরে মেয়েদের স্বপ্নদোষ হলে কি করণীয় তা বলা হয়েছে। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে উম্মে সুলায়ম (রাযিঃ) এর অপর প্রশ্নের উত্তরে বোঝানো হয়েছে নারী পুরুষ উভয়ই একই এবং উভয়ের মধ্যেই এমন কিছু বিদ্যমান যা থেকে সন্তানেরা পিতামাতার বৈশিষ্ট্য লাভ করে থাকে। পরবর্তী অংশে রাসুল (ﷺ) নারী এবং পুরুষের শুক্রাণু এবং ডিম্বাণুর প্রকৃতিকে ব্যাখ্যা করেছেন এবং সর্বশেষ অংশে জেনেটিক ইনহেরিটেন্স কে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

 

Asief Mehedi

Assalamualaikum to all.My name is Asief Mehedi . I am an informal philosophy student. Let's talk about comparative theology, we work to suppress atheism. Help us to suppress atheism and come forward to establish peace.

2 Comments

  1. মাশা আল্লাহ ব্রাদার। আল্লাহ আপনার এই ত্যাগ কবুল করে জান্নাতের উচিলা বানিয়ে দিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button