সূচনাঃ
মাইক্রো বিবর্তনের মেকানিজম গুলো একদিনে দেয়া হয়নি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিজ্ঞানীগণ একেকটা প্রক্রিয়া প্রস্তাব করেছেন যেমন ডারউইনের প্রস্তাবিত মেকানিজম ছিলো প্রাকৃতিক নির্বাচন। যখন বিজ্ঞানীরা দেখলেন প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে এতো পরিবর্তন হতে পারে না তখন তারা একে একে অন্যান্য মেকানিজম প্রস্তাব করতে থাকেন। নব্বই এর দশকে ডারউইনবাদ যখন নিঃশেষ হওয়ার পথে তখন থিওডিওস ডবঝনস্কি, জুলিয়ান হাক্সলি প্রমুখ বিজ্ঞানীরা প্রচলিত মাইক্রো বিবর্তন এর প্রক্রিয়ার সাথে মিউটেশন, জিন ফ্লো, জেনেটিক ড্রিফট, জার্মপ্লাজম এসকল মেকানিজম সংযুক্ত করে প্রস্তাব করেন আধুনিক সংশ্লেষণ তত্ত্ব যা একাডেমিয়াতে মর্ডাণ সিন্থেসিস হিসেবে পরিচিত। প্রচলিত মেকানিজম গুলো নিয়ে নব্য ডারউইনবাদের জন্য যে মেকানিজম প্রস্তাবিত তাই মডার্ণ সিন্থেসিস।
মডার্ণ সিন্থেসিস সূত্রঃ উইকিপিডিয়া
বিবর্তনবাদী নাস্তিক ফিলোসফার মাইকেল রুজের মতে,
মডার্ণ সিন্থেসিস ( নব্য ডারউইনবাদ) যা আধুনিক জীববিজ্ঞানের গবেষণার ভিত্তি হিসেবে বেড়ে উঠেছিলো বিংশ শতাব্দীর তৃতীয় ভাগ থেকেই এই তত্ত্ব বহু চ্যালেঞ্জ এর সম্মুখীন হয়ে আসছে। এই নব্য ডারউইনবাদ ( মর্ডাণ সিন্থেসিস) একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে এসে অনেকাংশে ভেঙে পড়েছে। অর্থাৎ নব্য ডারউইনবাদ স্রেফ একটা খোড়া তত্ত্ব। (১)
আপনাদের আরেকটু চিন্তা করতে বলি, বর্তমান সময়ে হিউম্যান ইভোলিউশন বা লার্জ স্কেল চেইঞ্জ এর জন্য সে এভিডেন্স গুলো উপস্থাপন করা হয় প্রি ডারউইনিয়ান সময়ে সেগুলো কে দেখা হতো ঈশ্বরের কাজ হিসেবে। যেমন ধরুন জিনোমের সাদৃশ্যতা, কিংবা অঙ্গসমুহের মিল, ভ্রুণের মিল এই বিষয় গুলো কিন্তু খুব ভালো ভাবে ইভোলুশনারি ফ্রেমওয়ার্ক ছাড়াও ডিফারেন্ট ইন্টারপ্রিটেশান এ নিয়ে চিন্তা করা যায়। যেমন হোমোলজিকাল মিল দেখলেই এটা ভাবার কারণ নেই যে যেই প্রজাতি অন্য কোনো একক পূর্বপুরুষ থেকে এসেছে বরং এটা খুবই সম্ভব যে তার উৎপত্তি হয়েছে স্বতন্ত্রভাবে এবং স্রষ্টা একই জিন দিয়ে সবাইকে সৃষ্টি করেছেন তাই এতো মিল। এতো এতো ফসিল রেকর্ড এগুলো আসলে সিমিলারিটির উপর ভিত্তি করেই মানুষের সাথে জুড়ে দেয়া হয়। কেন জুড়ে দেয়া হয়? কারণ বিজ্ঞান জাগতিক ব্যাখ্যা প্রদানে বাধ্য। (২)
সুতরাং বিবর্তন তত্ত্ব কে আপনি একটা সাইন্টিফিক মডেল বলতে পারেন তবে এটাকে ঈশ্বর কিংবা ধর্মের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা নেহাতই মুর্খতার সামিল। মুল মেকানিজম ১৫০ বছর ধরে প্রশ্নবিদ্ধ এমনকি আজ ১৫০ বছর পরেও এর কোনো সঠিক সুরাহা মিলে নি বরং আরও বেড়েই চলেছে। যেমন অক্সফোর্ড বায়োলজিস্ট ডেনিস নোবেল গবেষণায় দেখিয়েছেন,
❝ মডার্ণ সিন্থেসিস ( নব্য ডারউইনবাদ) এর প্রত্যেকটি কেন্দ্রীয় এজাম্পশন ( ধারণা) ভুল প্রমাণিত হয়েছে।❞ (৩)
এছাড়াও বর্তমানে এমন অনেক গবেষণা হয়েছে যার দ্বারা এটা সুস্পষ্ট যে নব্য ডারউইনবাদ আদৌ কোনো ভালো তত্ত্ব নয়। সুতরাং যেখানে মুল মেকানিজম প্রশ্নবিদ্ধ এবং ভুল প্রমাণিত হয়েছে, সেখানে কেবলমাত্র সাদৃশ্যের ভিত্তিতে হিউম্যান ইভোলিউশন বা ম্যাক্রো ইভোলিউশন কে গস্পেল ট্রুথ হিসেবে প্রচার করাটা হিপোক্রেসি, এবং একে ধর্মের বিরুদ্ধে ব্যবহার করাটা অকালপক্বের লক্ষণ ও বটে।
রেফারেন্সঃ
1.Rose, M.R., Oakley, T.H. The new biology: beyond the Modern Synthesis. Biol Direct 2, 30 (2007). https://doi.org/10.1186/1745-6150-2-30
2 Scott C. Todd (1999), A view from Kansas on that evolution debate; Nature, vol. 401, p. 423
3https://doi.org/10.1113/expphysiol.2012.071134